Some memories of independence 20 : Training tools / content of training / স্বাধীনতার কিছু স্মৃতি 20 : প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম / প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু
Some memories of independence 20
Training tools / content of training
স্বাধীনতার কিছু স্মৃতি 20
প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম / প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু
এই অংশটি ১৭ পর্বের পরই লেখা উচিৎ ছিল, কিন্তু দেরী হয়ে গেল। পাঠকদেরকে অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত।
আমি পূর্বের কোন এক পর্বে বলেছি, কাউকে অস্ত্র ট্রেনিং করানোর মত আমাদের কোন অস্ত্র বা পরিবেশ বা জনশক্তি ছিল না। কিন্তু যারা আমাদের সাথে কাজ করতে চায়, তাদের আত্মরক্ষার জন্য মিনিমাম কিছু ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন। নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ত দিয়ে সামান্য কিছু ট্রেনিং করিয়েছিলাম। অনেক কিছুই আমার মনে ছিল না। আমাদের দলবন্ধু আশরাফুলের থেকে জেনে নিয়েছি। ৫০ বছর আগের কথা, তাই সেও কিছুটা ঝাপসা ঝাপসা ভাবে উত্তর করলো। আর আমার স্মৃতি থেকে অনেক কিছুই বিলুপ্তি পেয়েছে।
(ক) শত্রুর কাছাকাছি যাওয়ার পদ্ধতি
ক্রলিং এবং এর বিভিন্ন পজিশন যেমন হাঁটু ভেঙ্গে হাঁটা (নিলিং), কোমর নিচু করে হাঁটা ইত্যাদি
আমাদের নিকট যেহেতু ভারি কোন অস্ত্র নাই, তাই সম্মুখ যুদ্ধের জন্য শত্রুর কাছাকাছি যেয়ে তাকে ঘায়েল করতে হবে এমন চিন্তা করাটাও যুদ্ধ কৌশল নয়। এতে ঝুকিও বেশী। ধরা পড়লে শত্রু পক্ষ গুলি করে মারবেনা, দলের গোপন তথ্যাবলি সাজির খইল চিপার মত কড়াই গোণ্ডাই নিংড়িয়ে বের করে নিবে এবং তিলে তিলে অত্যাচার করে শেষ মেশ এজগত থেকে বিদায় দিবে। সাথে হাল্কা অস্ত্র থাকতে আপত্তি নাই। কোনভাবেই শব্দ করা যাবেনা যেন শ্ত্রুপক্ষ টের পেয়ে যায়। একই সারিতে অগ্রসর হওয়া উচিৎ নয়। যদি ধরা পড়ে, তাহলে সকলেই একসাথে কুপো কাইথ। কাজেই কয়েক মিটার দূর দূর অগ্রসর হওয়া। আমরা এই কাজগুলো হাতে কলমে শিখেয়েছি।
(খ) ক্যামোফ্লাজ বিশেষ করে রাতের বেলায় নিজ অস্তিত্বকে কিভাবে লুকিয়ে রাখা যায় তার জন্য পোশাক নির্ধারণ, গাছ পাতার রঙ, কিভাবে মাথা বা শরীরে জড়াতে হবে, এসব পদ্ধতি। এছাড়া খুব সহজে নড়াচড়া করার যোগ্য কাপড় পরা বাঞ্ছনীয়।
(গ) রাইফেল সংক্রান্ত
রাইফেলের বিভিন্ন অংশের নাম এবং এর বৈশিষ্ট, ম্যাগাজিন খোলা এবং সেট করার পদ্ধতি, পরিস্কার করার নিয়ম কানুন, সংরক্ষণ পদ্ধতি ইত্যাদি। বেয়নেটের ব্যবহার, রাইফেলের ব্যাটের সাথে কিভাবে সেট করা যায়, রাইফেলের ম্যাগাজিনে গুলি না থাকলে সেটি কিভাবে ব্যাবহার করা যায়, শত্রু যেন বুঝতে না পারে রাইফেলের গুলি শেষ হয়ে গেছে ইত্যাদি। বিশেষ করে বেয়োনেটের ব্যবহার ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের কোন জায়গায় আঘাত করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে, বা পেটের ভিতরে ঢোকানোর পর কিভাবে ঘুরাতে হবে, ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে কথা বললে এখনো শরীর শিহরিয়ে ওঠে। আমাদের ট্রেনিং মানুষ কে মারার জন্য, বাঁচানোর জন্য নয়। অবশ্য এই ট্রেনিং করানো হয়েছিল বলেই মিনাপাড়ার হারুনুর রশিদ দুলুকে ( সাবেক মকবুল এম পির চাচাত ভাই এবং মিকুশিস হাইস্কুলের শিক্ষক) ওই গ্রাম থেকেই উদ্ধার করা একটা রাইফেল দিয়েছিলাম। যদিও কখনই ঐ রাইফেলটি ব্যবহৃত হয় নাই। আরেকজন ব্যক্তিকে আমরা অস্ত্র ট্রেনিং দিয়েছিলাম। সহড়াতলা নিবাসী জোড়পুকুর হাইস্কুলের প্রাক্তন হেড মাষ্টার জনাব গোলাম মোস্তফা। তাকে একদিন যুদ্ধমাঠেও নামতে হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে অন্য এক সময় আরও বিস্তারিত লিখব।
(ঘ) শত্রুপক্ষের সেন্ট্রিকে আঘাত করার পদ্ধতি
শত্রুপক্ষের ক্যাম্পে পাহারারত গার্ডম্যানকে কিভাবে আঘাত করা যায়, কোন শব্দ হবেনা, অথচ সে মাটিতে পড়ে যাবে এবং তার হাড়গোড় ভেঙ্গে যাবে, তার অস্ত্রটি ছিনিয়ে নেওয়া যাবে, সেই কৌশল সম্পর্কে ট্রেনিং। সেন্ট্রিরা যখন ডিউটিতে থাকে, বিশেষ করে রাত্রি বেলায়, তখন অনেক সময় ঘুম ঘুম ভাব, ক্লান্ত থাকে। ঠিক সে সময়ই পিছন থেকে এক হাত দিয়ে চোখ এবং মুখ বন্ধ করে ফেলা যাতে গোঁংড়ানো বা চিৎকার করতে না পারে, অন্য হাত দিয়ে শত্রুর গলা খুব কঠিন ভাবে ধরে ফেলা যাতে নিঃশ্বাস নিতে না পারে, হাঁটু দিয়ে পিছন থেকে খুব জোরে কোমরে আঘাত করে মাটিতে শুইয়ে ফেলান ইত্যাদি। এগুলোর টেকনিক্যাল টার্ম আছে, আপাতত আমার মনে পড়ছে না।
রাস্তায় চলার সময় শ্ত্রু যখন মুখোমুখি হবে, তখন তাকে আকস্মিক আক্রমনের মাধ্যমে কিভাবে ঘাইল করা যায়, তার অস্ত্রটি নিমিষের মধ্যেই ছিনিয়ে নিয়ে সেই অস্ত্র দিয়েই তাকে আঘাত করা পদ্ধতি নিয়েও ট্রেনিং হয়েছে। একই রাস্তায় একাধিকবার চলাফেরাটাও ছিল নিয়ম বহির্ভূত।
গ্রেনেডের ট্রেনিং থেকে আমরা দূরে ছিলাম। কারন গ্রেনেড খুবই শক্তিশালী, বিপজ্জনক। যদি সেফটি পিনটি কোন কারন বশত খুলে যায়, তাহলে ঘটনা স্থলে যারা থাকবে, তারা সকলেই আহত হবে, অথবা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে। এছাড়া আমাদের সাথে মাত্র দুইটা ছাড়া গ্রেনেড ছিল না। এগুলো সর্বদা বহন করার মত জিনিষ নয়, কাউকে দিয়ে পরিক্ষা করানোর জিনিষও নয়।
এছাড়া আমাদের প্রধান ট্রেনিং ছিল রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক। এক কথায় প্রোপাগান্ডা। তাই গ্রুপ মিটিং বা ব্যাক্তি পর্যায়ে মিটিং করেছি। জনগণকে সর্বদা সরকার বিরোধী থাকার পরামর্শ দিয়েছি। আর আমাদের সাথে যোগ দিয়েছে অনেক বিদ্যাবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ।
আজ এখানেই শেষ ১২ই জুন, ২০২০
copyright from Facebok ID
Training tools / content of training
স্বাধীনতার কিছু স্মৃতি 20
প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম / প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তু
এই অংশটি ১৭ পর্বের পরই লেখা উচিৎ ছিল, কিন্তু দেরী হয়ে গেল। পাঠকদেরকে অপেক্ষা করানোর জন্য দুঃখিত।
আমি পূর্বের কোন এক পর্বে বলেছি, কাউকে অস্ত্র ট্রেনিং করানোর মত আমাদের কোন অস্ত্র বা পরিবেশ বা জনশক্তি ছিল না। কিন্তু যারা আমাদের সাথে কাজ করতে চায়, তাদের আত্মরক্ষার জন্য মিনিমাম কিছু ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন। নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ত দিয়ে সামান্য কিছু ট্রেনিং করিয়েছিলাম। অনেক কিছুই আমার মনে ছিল না। আমাদের দলবন্ধু আশরাফুলের থেকে জেনে নিয়েছি। ৫০ বছর আগের কথা, তাই সেও কিছুটা ঝাপসা ঝাপসা ভাবে উত্তর করলো। আর আমার স্মৃতি থেকে অনেক কিছুই বিলুপ্তি পেয়েছে।
(ক) শত্রুর কাছাকাছি যাওয়ার পদ্ধতি
ক্রলিং এবং এর বিভিন্ন পজিশন যেমন হাঁটু ভেঙ্গে হাঁটা (নিলিং), কোমর নিচু করে হাঁটা ইত্যাদি
আমাদের নিকট যেহেতু ভারি কোন অস্ত্র নাই, তাই সম্মুখ যুদ্ধের জন্য শত্রুর কাছাকাছি যেয়ে তাকে ঘায়েল করতে হবে এমন চিন্তা করাটাও যুদ্ধ কৌশল নয়। এতে ঝুকিও বেশী। ধরা পড়লে শত্রু পক্ষ গুলি করে মারবেনা, দলের গোপন তথ্যাবলি সাজির খইল চিপার মত কড়াই গোণ্ডাই নিংড়িয়ে বের করে নিবে এবং তিলে তিলে অত্যাচার করে শেষ মেশ এজগত থেকে বিদায় দিবে। সাথে হাল্কা অস্ত্র থাকতে আপত্তি নাই। কোনভাবেই শব্দ করা যাবেনা যেন শ্ত্রুপক্ষ টের পেয়ে যায়। একই সারিতে অগ্রসর হওয়া উচিৎ নয়। যদি ধরা পড়ে, তাহলে সকলেই একসাথে কুপো কাইথ। কাজেই কয়েক মিটার দূর দূর অগ্রসর হওয়া। আমরা এই কাজগুলো হাতে কলমে শিখেয়েছি।
(খ) ক্যামোফ্লাজ বিশেষ করে রাতের বেলায় নিজ অস্তিত্বকে কিভাবে লুকিয়ে রাখা যায় তার জন্য পোশাক নির্ধারণ, গাছ পাতার রঙ, কিভাবে মাথা বা শরীরে জড়াতে হবে, এসব পদ্ধতি। এছাড়া খুব সহজে নড়াচড়া করার যোগ্য কাপড় পরা বাঞ্ছনীয়।
(গ) রাইফেল সংক্রান্ত
রাইফেলের বিভিন্ন অংশের নাম এবং এর বৈশিষ্ট, ম্যাগাজিন খোলা এবং সেট করার পদ্ধতি, পরিস্কার করার নিয়ম কানুন, সংরক্ষণ পদ্ধতি ইত্যাদি। বেয়নেটের ব্যবহার, রাইফেলের ব্যাটের সাথে কিভাবে সেট করা যায়, রাইফেলের ম্যাগাজিনে গুলি না থাকলে সেটি কিভাবে ব্যাবহার করা যায়, শত্রু যেন বুঝতে না পারে রাইফেলের গুলি শেষ হয়ে গেছে ইত্যাদি। বিশেষ করে বেয়োনেটের ব্যবহার ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের কোন জায়গায় আঘাত করলে ভাল ফল পাওয়া যাবে, বা পেটের ভিতরে ঢোকানোর পর কিভাবে ঘুরাতে হবে, ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে কথা বললে এখনো শরীর শিহরিয়ে ওঠে। আমাদের ট্রেনিং মানুষ কে মারার জন্য, বাঁচানোর জন্য নয়। অবশ্য এই ট্রেনিং করানো হয়েছিল বলেই মিনাপাড়ার হারুনুর রশিদ দুলুকে ( সাবেক মকবুল এম পির চাচাত ভাই এবং মিকুশিস হাইস্কুলের শিক্ষক) ওই গ্রাম থেকেই উদ্ধার করা একটা রাইফেল দিয়েছিলাম। যদিও কখনই ঐ রাইফেলটি ব্যবহৃত হয় নাই। আরেকজন ব্যক্তিকে আমরা অস্ত্র ট্রেনিং দিয়েছিলাম। সহড়াতলা নিবাসী জোড়পুকুর হাইস্কুলের প্রাক্তন হেড মাষ্টার জনাব গোলাম মোস্তফা। তাকে একদিন যুদ্ধমাঠেও নামতে হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে অন্য এক সময় আরও বিস্তারিত লিখব।
(ঘ) শত্রুপক্ষের সেন্ট্রিকে আঘাত করার পদ্ধতি
শত্রুপক্ষের ক্যাম্পে পাহারারত গার্ডম্যানকে কিভাবে আঘাত করা যায়, কোন শব্দ হবেনা, অথচ সে মাটিতে পড়ে যাবে এবং তার হাড়গোড় ভেঙ্গে যাবে, তার অস্ত্রটি ছিনিয়ে নেওয়া যাবে, সেই কৌশল সম্পর্কে ট্রেনিং। সেন্ট্রিরা যখন ডিউটিতে থাকে, বিশেষ করে রাত্রি বেলায়, তখন অনেক সময় ঘুম ঘুম ভাব, ক্লান্ত থাকে। ঠিক সে সময়ই পিছন থেকে এক হাত দিয়ে চোখ এবং মুখ বন্ধ করে ফেলা যাতে গোঁংড়ানো বা চিৎকার করতে না পারে, অন্য হাত দিয়ে শত্রুর গলা খুব কঠিন ভাবে ধরে ফেলা যাতে নিঃশ্বাস নিতে না পারে, হাঁটু দিয়ে পিছন থেকে খুব জোরে কোমরে আঘাত করে মাটিতে শুইয়ে ফেলান ইত্যাদি। এগুলোর টেকনিক্যাল টার্ম আছে, আপাতত আমার মনে পড়ছে না।
রাস্তায় চলার সময় শ্ত্রু যখন মুখোমুখি হবে, তখন তাকে আকস্মিক আক্রমনের মাধ্যমে কিভাবে ঘাইল করা যায়, তার অস্ত্রটি নিমিষের মধ্যেই ছিনিয়ে নিয়ে সেই অস্ত্র দিয়েই তাকে আঘাত করা পদ্ধতি নিয়েও ট্রেনিং হয়েছে। একই রাস্তায় একাধিকবার চলাফেরাটাও ছিল নিয়ম বহির্ভূত।
গ্রেনেডের ট্রেনিং থেকে আমরা দূরে ছিলাম। কারন গ্রেনেড খুবই শক্তিশালী, বিপজ্জনক। যদি সেফটি পিনটি কোন কারন বশত খুলে যায়, তাহলে ঘটনা স্থলে যারা থাকবে, তারা সকলেই আহত হবে, অথবা মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে। এছাড়া আমাদের সাথে মাত্র দুইটা ছাড়া গ্রেনেড ছিল না। এগুলো সর্বদা বহন করার মত জিনিষ নয়, কাউকে দিয়ে পরিক্ষা করানোর জিনিষও নয়।
এছাড়া আমাদের প্রধান ট্রেনিং ছিল রাজনৈতিক এবং মনস্তাত্ত্বিক। এক কথায় প্রোপাগান্ডা। তাই গ্রুপ মিটিং বা ব্যাক্তি পর্যায়ে মিটিং করেছি। জনগণকে সর্বদা সরকার বিরোধী থাকার পরামর্শ দিয়েছি। আর আমাদের সাথে যোগ দিয়েছে অনেক বিদ্যাবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ।
Some memories of independence 20 Training tools / content of training |
আজ এখানেই শেষ ১২ই জুন, ২০২০
copyright from Facebok ID
No comments